পাখির ধাক্কায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা খুব বিরল হলেও, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পাখির ধাক্কা উড়োজাহাজের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
উড়োজাহাজের গতি এর জন্য মুখ্য কারণ। আকাশে উড়োজাহাজ প্রতি সেকেন্ডে নূন্যতম ১৫০-২৫০ মিটার বেগে গতিশীল থাকে, কখনও আরও বেশি। এজন্য ১ থেকে ৫ কেজির একটি পাখির ধাক্কা উড়োজাহাজে কামানের গোলার মত আঘাত করে।
উড়োজাহাজের জেট ইঞ্জিনের রোটরের ব্লেডগুলো প্রচন্ড বেগে (কয়েক হাজার আরপিএমে) ঘোরে এবং বাতাসের বিশাল শক্তিশালী একটা ঝটকা তৈরি করে। ফলে ইঞ্জিনের সামনে কোন পাখি চলে এলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাখি জেট এঞ্জিনের রোটর ব্লেডে আঘাত করে। এতে অনেক ক্ষেত্রেই এক বা একাধিক ব্লেড ভেঙ্গে যায় এবং সেই ভাঙ্গা ব্লেড গুলোর সঙ্গে ঘুরন্ত ব্লেড গুলোর ধাক্কা লেগে অন্য ব্লেডগুলোও ভেঙে যায় অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় পুরো জেট এঞ্জিন কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে যা দুর্ঘটনার মূল কারণ।
যদিও বড় উড়োজাহাজে একাধিক ইঞ্জিন থাকে, একটা ইঞ্জিনের ক্ষতি হলে সামাল দেওয়া যায়। তবে বিমানবন্দরে প্লেন ওঠানামার সময় উড়োজাহাজ অনেকসময় পাখির ঝাঁকের সম্মুখীন হতে পারে বা আকাশে উচুঁতে ওড়ার সময় পরিযায়ী পাখিদের ঝাঁকের সম্মুখীন হতে পারে। ফলে একাধিক ইঞ্জিনে পাখি ঢুকে সমস্ত ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, তখন আর কিছু করার থাকেনা।
উড়োজাহাজের পাখা, নোজ বা রাডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশে পাখি আঘাত করলে এর গঠনগত স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আকাশে উচুঁতে ওড়ার সময় পরিযায়ী পাখিদের আঘাতে ককপিটের উইন্ডো ভেঙে যায়, যা উড়োজাহাজের ভিতরে বাতাসের চাপের কারণে ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া ঘটায়, পাইলটদের কাজে বাধা সৃষ্টি করে এবং উড়োজাহাজকে নিরাপদে নামানো কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
আবার উড়োজাহাজের ডানায় তেলের ট্যাঙ্ক থাকে, যেটা পাখির আঘাতে ফুটো হয়ে যেতে পারে, তাতে প্লেনে আগুন ধরে যেতে পারে।