একটি রাষ্ট্রের মুকুট হলো সে দেশের বুদ্ধিজীবী, চিন্তাবিদ এবং পণ্ডিত ব্যক্তিরা। যে জাতি তাদেরকে যত বেশি কদর করতে পেরেছে, সে জাতি তত এগিয়েছে। কারণ তারাই রাষ্ট্রের আলোকবর্তিকা বাহক। কিন্তু যখন তাদেরকে প্রাপ্য সম্মান করা হবেনা তখন স্বাভাবিকভাবেই রাষ্ট্রের গতিপথ বদলে যাবে, রাষ্ট্র ছুটবে অন্ধকারের দিকে।
সম্প্রতি প্রথিতযশা বাংলাদেশী চিন্তাবিদ ও লেখক সলিমুল্লাহ খানকে নিয়ে যা হলো তা আমাদের দেশের জন্য এক অশনি সংকেত বহন করে। যা আমাদের জন্য লজ্জার। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারি ব্যক্তিদের কাছেই তিনি যথাযোগ্য সম্মান পেলেন না।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার প্রদান করা হয়৷ সলিমুল্লাহ খানও পুরষ্কার পান। কিন্তু ফটোসেশনের সময় তাকে রাখা হয় পেছনে। সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হয়। অন্যদিকে তার সামনে বসা ছিলো রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা। যাদের মধ্যে কেউ তার ছাত্র।
এই ঘটনা নেট দুনিয়ায় মুহুর্তেই ছড়িয়ে যায়। ব্যাপক সমালোচনা ও ট্রল হয় এটা নিয়ে। আক্ষেপের বিষয় হলো, তারা সামনে না বসে পুরষ্কারগ্রহণকারীর সাথে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে তো আর সমস্যা হতো না। সলিমুল্লাহ খানের মতো ব্যক্তিকে পেছনে দাঁড়িয়ে রেখে তারা যে অসম্মান প্রদর্শন করেছেন তা রাষ্ট্রের জন্য গুরুতর ও নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। কারণ আমরা নতুন বাংলাদেশ নিয়ে যে স্বপ্ন দেখি সেখানে এ ধরণের মানুষদের অবস্থান অনেক উঁচুতে। চেয়ারের মায়ায় পড়ে যেন আমরা শীর্ষদের অবজ্ঞা না করি।
সলিমুল্লাহ খান হাস্যজ্জ্বল ভঙ্গিতে অবশ্য এ ঘটনার জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘লোকজন বলছে, আপনি পুরস্কার নিলেন কেন?’ আরে.. পুরস্কার নেয়ার পরেই তো বেইজ্জতটা করছে। বাংলা একাডেমি যদি সম্মান প্রদর্শন করতে না জানে, তাহলে আমাদের কী করা উচিত?’
তিনি যে এই ঘটনায় অসম্মানিত হয়েছেন তা তার কথা থেকে স্পষ্ট। শুধু এটি নয় এমন অনেক ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে যেখানে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও চিন্তাবিদরা অসম্মানিত হয়েছেন কিন্তু এটা চলতে থাকলে দেশ আর এগোতে পারবে না। দেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি মুখ থুবরে পড়বে। তাই রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে এ সমস্ত ব্যক্তিদের সম্মানের জায়গাটা নিশ্চিত করা জরুরি।