বাংলাদেশে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি নেমে এসেছে। এ অবস্থায় ফুটপাতে, রাস্তায় এবং শপিং মলগুলোর আশপাশে শুয়ে থাকা শত শত আশ্রয়হীন মানুষের দুর্দশা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
শীতকালীন পরিস্থিতি এবং আশ্রয়হীন মানুষের জীবনযাত্রা
বাংলাদেশের শীতকাল সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ সময়ে তাপমাত্রা অনেক অঞ্চলে ১০°C বা তার নিচে নেমে যায়। শহরের ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী মানুষদের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। শীত, কুয়াশা, ঠাণ্ডা বাতাস ও মাঝেমধ্যে বৃষ্টির প্রকোপে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
আবাসন সংকট: মূল সমস্যা
আবাসন সংকট বাংলাদেশের একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। শহরাঞ্চলে জমির সংকট, বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি এবং স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বাসস্থানের অভাব এই সংকটকে আরও তীব্র করেছে। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন বাড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ সস্তা বাসস্থানের অভাবে রাস্তায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।
সরকারি উদ্যোগ এবং কার্যকারিতা
প্রতি বছর সরকার শীতবস্ত্র বিতরণ, আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এসব উদ্যোগ অস্থায়ী সাহায্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের অভাব এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি আশ্রয়হীন মানুষের সংকট কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বেসরকারি উদ্যোগ এবং সমাজের দায়িত্ব
বেসরকারি সংস্থা এবং এনজিওগুলো সাময়িক সাহায্য প্রদান করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পাশাপাশি, সমাজের একাংশ আশ্রয়হীন মানুষদের প্রতি সহানুভূতির অভাব দেখায়, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
করণীয়
শীতকালীন দুর্দশা লাঘব করতে হলে শুধু শীতবস্ত্র বিতরণই যথেষ্ট নয়। সরকারের উচিত আশ্রয়হীনদের জন্য স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিত করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কার্যকর করা। এনজিও, বেসরকারি সংস্থা এবং সমাজের সচেতন অংশকেও একযোগে কাজ করতে হবে।
লেখক:
যায়েদুল ইসলাম
আইন ও বিচার বিভাগ
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (BUBT)