সম্প্রতি দেশের অপরাধজগতে আলোচিত হচ্ছে এক ধরনের ভয়ংকর ড্রাগ, যার নাম ‘স্কোপোলামিন’। এই ড্রাগটিকে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ বা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। অপরাধীরা এই ড্রাগ ব্যবহার করে সহজেই মানুষকে হিপনোটাইজ বা বশ করে নেয়ার মাধ্যমে তার মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিচ্ছে।
স্কোপোলামিন, যা এক ধরনের সিনথেটিক ড্রাগ। এটি মূলত ধুতরা ফুল থেকে তৈরি হয়। এই ফুলের সঙ্গে আরও কিছু উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় স্কোপোলামিন। এটি তরল এবং পাউডার—দুই রকমের হয়। এই ড্রাগের শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে দ্রুত তার প্রভাব পড়ে, যা আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক ধরনের সম্মোহিত অবস্থায় নিয়ে যায়। ফলে তিনি অপরাধীদের আদেশে তার সব জিনিসপত্র তুলে দেয়।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্কোপোলামিনের কিছু ব্যবহার আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি ‘ট্রুথ সেরাম’ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হলে, এর প্রভাব ব্যক্তি বিশেষের মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। যার ফলে তিনি গোপন তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য হন।
স্কোপোলামিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঝাপসা দেখা, মাথাব্যথা, অস্থির লাগা এবং অতিরিক্ত প্রয়োগের ফলে হার্টবিট বৃদ্ধি, চোখের মণি বড় হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। কিছু ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগ করলে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।
এক্ষেত্রে করণীয়:
• রাস্তায় বা যানবাহনে চলাচলের সময় অপরিচিত কারো কাছ থেকে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করবেন না।
• যদি অপরিচিত কেউ ভিজিটিং কার্ড বা কাগজ আপনার মুখের সামনে ধরার চেষ্টা করে, তাহলে সাবধান থাকুন।
• রাস্তায় চলাচল করার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন, এতে স্কোপোলামিন শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না।
• যদি কোনো সন্দেহজনক ঘটনা ঘটে, তাহলে নিকটস্থ থানায় অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য নিন।
• যদি আক্রান্ত ব্যক্তি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তবে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।