কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে প্রস্তাবিত ওরিয়ন ৬৩৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তা বাংলাদেশের পরিবেশ, অর্থনীতি ও জনস্বার্থের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে দাবি করেছেন পরিবেশবাদী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁদের ভাষায়, এটি “বাংলাদেশের জন্য এক মরণ ফাঁদ”।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইয়ুথ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, সৌহার্দ্য ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন, আমরাই আগামী, উই ক্যান কক্সবাজার, ক্লিন ও বিডাব্লিউজিইডি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও জনসমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে অংশ নেন শতাধিক পরিবেশকর্মী, শিক্ষার্থী, অধিকারকর্মী, নাগরিক প্রতিনিধি এবং মাতারবাড়ি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, যেখানে ৪৯২ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, সেই জমিতে এখন আমদানি-নির্ভর, দূষণকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি সরকারের অঙ্গীকারের পরিপন্থী এবং একপ্রকার উপহাস।
তাঁরা জানান, প্রকল্পটি চালু হলে বছরে প্রায় ৫ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) নিঃসরণ হবে, যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বাংলাদেশের নেওয়া নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইতোমধ্যে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, হারিয়েছেন জীবিকা। কৃষি, চিংড়ি ও লবণ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে পানির সংকট ও স্বাস্থ্যঝুঁকি।
বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, “যখন প্রকল্পের নির্মাণ কাজই শুরু হয়নি, তখন কীসের ভিত্তিতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত একাধিকবার সময় ও ঋণ দেওয়া হচ্ছে? কয়লার নামে আসলে কার স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে?”
তাঁদের অভিযোগ, এই প্রকল্পের জন্য সরকারের নেওয়া ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ঋণ জনগণের অর্থের অপচয়। এই প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কয়লার বিরুদ্ধে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।