রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজ অবস্থিত। ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এই দুটি অন্যতম বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান। ঐতিহ্য, শিক্ষা, মান, পড়াশোনার পরিবেশ ভালো হলেও এই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে যেমন তারা নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হোন, ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। একটা কিছু হলেই দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব মোড় ব্লক করে ফেলে। এই মোড়টি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হওয়ায়, সংঘর্ষ শুরু হলে লেগে যায় তীব্র যানজট। এতে ক্ষতি হয় আমাদের সকলের।
গতকাল সোমবারের একটি মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সাইন্সল্যাব এলাকা। তিন ঘন্টা ধরে চলে উত্তেজনা। কখনো ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলে, নিবৃত্ত করতে গেলে কখনো পুলিশের সাথে তাঁদের সংঘর্ষ হয়।
চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, এমনকি লাঠিসোঁটাও ব্যবহৃত হয়। কলেজের স্থাপনাগুলোতেও হয় হামলা।
কেন বার বার ঘটে সংঘর্ষ?
১. ঢাকা কলেজ এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। কলেজ দুটো কাছাকাছি হওয়ায় প্রয়োজনে-অপ্রোয়জনে তাঁদেরকে একই এলাকা দিয়ে চলাচল করতে হয়। হরহামেশাই সামান্য বিষয় নিয়ে একটু দ্বিমত, বিরোধ হলেই তাঁদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। নিজেদের সেরা এবং শক্তিশালী প্রমাণ করার জন্য গন্ডগোল না বাঁধিয়ে তারা ক্ষান্ত হয়না। পাশে অবস্থিত আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথেও কখনো তৈরি হয় ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি।
২. এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সোস্যাল মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গাত্মক, হিংসাত্মক পোস্ট করে থাকেন। একে কেন্দ্র করে কখনো ঝামেলা বেঁধে যায়।
৩. শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে কলেজগুলোর যতটা শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামো থাকা দরকার সেটার ঘাটতি থাকায় পরিস্থিতি অনুকূলে আনা কঠিন হয়।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বার বার সংঘর্ষের ঘটনা দেশের শিক্ষার মান এবং পরিস্থিতি নিয়ে খুবই নেতিবাচক বার্তা দেয়। তাই যেভাবেই হোক এই সমস্যাগুলোর একটা স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধে শিক্ষক, অভিভাবক, পুলিশ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়।