কিশোরী সুবার নিখোঁজ হওয়া এবং পরবর্তীতে তার সন্ধান পাওয়ার ঘটনা এখন সারাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
১১ বছর বয়সী এই কিশোরীর ঘটনা থেকে আপাতত ৩টি জিনিস সামনে আসে। বাসায় মন না বসা, টিকটকে প্রেম এবং পরিবারকে না জানিয়ে পালানো। সুবার ঘটনাই যে একমাত্র ঘটনা তা কিন্তু নয়। এ বয়সের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এরকম ঘটনা অহরহই ঘটছে। কেবল সুবার বিষয়টা বেশি প্রচার পাওয়ায় সামনে এসেছে।
এ ধরণের ঘটনার পেছনে দায়ী প্রধান যে কারণগুলো তা হলো প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, পারিবারিক বন্ধনের শীতলতা, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের অপার্যপ্ততা এবং প্যারেন্টিং এর ক্ষেত্রে যত্ন ও কৌশলের অভাব।
একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানদের হাতে ফোন তুলে দেয়া অনিরাপদ। কারণ সেখানে অনেকগুলো ফাঁদ তৈরি করে দেয়া থাকে যেখানে পা ফসকে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সন্তানদের হাতে ফোন তুলে দিলেও তারা যেন তা নির্দিষ্ট সময় ঠিক রেখে শিক্ষা ও সুস্থ বিনোদনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে এ বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে। সন্তানরা পিতামাতাকে দেখে শিখে৷ তাই সন্তানের সামনে অতিরিক্ত ফোন না চালিয়ে বরং তাদেরকে ইতিবাচক অর্থে সময় দিতে হবে।
সন্তানকে ঔচিত্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য যে সমস্ত উপাদান দায়ী তা যেন আপনার সন্তানের মধ্যে জেঁকে না বসে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে।
পরিবারের বাইরে আপনার সন্তান কাদের সাথে মিশছে, কিভাবে মিশছে এ ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কেননা সেখান থেকে তার প্রভাবিত হওয়ার চান্স অনেক বেশি।
সন্তানকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় দীক্ষিত করতে হবে। তার সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আপনার সন্তান যে জেনারেশনের তার ভাব ও ভাষা বুঝতে হবে।
ইতোমধ্যেই সুবা ও তার পরিবার সামাজিক চাপে পড়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁদের নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে৷ এ অবস্থায় সকলের উচিত তাকে নিয়ে ট্রল না করে সমাজের মূল সমস্যাটা বোঝা এবং সে অনুযায়ী নিজ নিজ জায়গা থেকে পদক্ষেপ নেয়া। এরকম ঘটনা আপনার সন্তানের সাথেও হতে পারে, আপনার পরিবারেও ঘটতে পারে৷ তাই নিজ অবস্থান থেকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।